আদিলুর রহমান স্টাফ রিপোর্টার, ময়মনসিংহ:
ছাত্রদলের সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ছাত্রদলের পুরাতন আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে অসন্তোষের দানা বেঁধেছে নেতৃত্বে আসতে না পারা কর্মীদের। ৩ মাসের কমিটি গঠনে ৪ বছর পার হলেও কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি আজও হয়নি। এমনকি হল কমিটিও না।
এ নিয়ে নতুন নেতৃত্বের শুন্যতা দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ খোদ কমিটির একাধিক নেতাদের মাঝে। নতুন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়ায় যোগ্যদের মুল্যায়ন করে নতুন নেতৃত্বের দিকে তাকিয়ে বঞ্চিতরা।
জানা যায়, ২০২১ সালে ১৬ জুন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল সাক্ষরিত ২১ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেন। ওই কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে আতিকুর রহমান ও শফিকুল ইসলাম কে সদস্য সচিব করা হয়। টাংগাইলের ছেলে আতিক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর অনুসারী। অপর দিকে সদস্য সচিব শফিক আকরামুল হাসান মিন্টুর অনুসারী এবং আপাদমস্তক আওয়ামী পরিবারের সন্তান। বিগত আন্দোলন সংগ্রামে ২১ জনের মধ্যে কেবল ৫ জন (আতিক, শফিক, তুষার, শোয়াইব এবং স্বপ্নীল) সক্রিয় ছিলেন। দু-এক জন ৫ই আগস্টের পর সক্রিয় হয়েছেন। বাকি সদস্যদের ক্যাম্পাসে কোন দিন কোন প্রোগ্রামে দেখা যায়নি।
অভিযোগ উঠেছে ,৫ আগস্টের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠনে চেয়ে নিজেদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছে কমিটির শীর্ষে থাকারা । বর্তমান আহ্বায়ক কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার দীর্ঘ সময়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে শক্ত অবস্থান নিতে ব্যার্থতার পরিচয় দিয়েছেন। ছাত্রদল কে করেছে একাধিক গ্রুপে বিভক্ত। এখন নিজেদের পদ বাঁচাতে কমিটির মেয়াদ বাড়াতে শুরু করেছেন লবিং তদবির।
অপরদিকে বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মো: তরিকুল ইসলাম তুষার নিজের কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের ব্যর্থতাকে দায়ী করে বলেন, পুর্নাঙ্গ কমিটি করতে বহুবার চাপ দিয়েও কাজ হয়নি। জুলাই -আগষ্টে রাজপথে কর্মীদের নিয়ে নিজেরাই রাজপথে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছি। আহ্বায়ক কমিটির বাকীদেরকে বারং বার তাগিদ দেওয়ার পরেও জুলাই – আগস্ট আন্দোলনে সক্রিয় করা যায়নি। সম্মেলনের পর এখন কর্মীদের ইচ্ছা যোগ্যদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হউক।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ন আহবায়ক এ এম শোয়াইব বলেন, সংগঠন চালাতে বর্তমান কমিটির আহবায়ক এবং সদস্য সচিব ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। তাদের কোন্দলের কারনে এবং আহবায়কের হল গুলোতে দূর্বল অবস্থানের কারনে হল কমিটি গুলোও করা যায়নি। তাদের নেতৃত্বের ব্যর্থতার কারণে ছাত্রদলের জন্য ত্যাগ স্বীকার করা ছেলেদেরকে পদ দিতে পারিনি। কমিটি পূর্ণাঙ্গ করতে না পারায় অবশেষে কেন্দ্র সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আহ্বায়ক এর মতই বিভিন্ন ব্যর্থতার অভিযোগ কমিটির সদস্য সচিব শফিকুল ইসলাম শফিকের বিষয়েও।
এদিকে গত ২৪শে এপ্রিল বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বাকৃবির আহ্বায়ক আজিজের উপর হামলা নিয়েও ক্যাম্পাসে অনেক বিতর্ক আছে । বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে ওঠা টেন্ডার ও নিয়োগ বানিজ্যের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার এবং হলের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বর্তমান কমিটির ইশারায় ২৬ মে সাংবাদিক রায়হান আবিদে উপর হামলার অভিযোগ রয়েছে ।
বাকৃবি ছাত্রদলের সাংগঠনিক দুর্বলতা ও বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সংগঠনের আহ্বায়ক আতিক বলেন, “ফ্যাসিস্ট হাসিনার সকল হামলা, মামলা, অত্যাচার, জেল, দমন-পীড়ন নির্যাতন সহ্য করে বিরোধী দলের রাজনীতি করেছি। আর এখন সুসময়ে সুবিধাবাদীদের অভাব নেই। ৫ আগস্ট এর পূর্বে সবাই ছাত্রলীগ করত। আমরা চাচ্ছি না হাইব্রিড কাউকে দলে পদ দিতে। তবে দ্রুত সময়ের ভেতর আমরা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করব।
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের দায়িত্বপ্রাপ্ত টিম লিডার শ্যামল মালুম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের ফরম বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা চলমান। কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সিদ্ধান্তে দ্রুতই নতুন কমিটি গঠন করা হবে।
মন্তব্য করুন