News Desk
২৯ জুন ২০২৫, ১০:২০ পূর্বাহ্ন
অনলাইন সংস্করণ

জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় বিচার ব্যবস্থার চরম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে

নিউজ ডেস্ক:

অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত গুমবিষয়ক কমিশন জানিয়েছে, গুমের শিকার ব্যক্তিদের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায়ের লক্ষ্যে প্রায়ই নির্যাতন চালানো হতো, যা তাদের এবং তাদের পরিবারের নাগরিক ও রাজনৈতিক জীবন বিপর্যস্ত করার পাশাপাশি দেশের বিচারব্যবস্থাকেও গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

কমিশনের দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিগত সরকারের শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের যে সংস্কৃতি চালু ছিল তা এমনভাবে ব্যক্তিজীবনে প্রবেশ করেছিল যে অনেক পরিবার তাদের নিজ বাড়ির নিরাপদ পরিসরেও ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘বহুল ব্যবহৃত, স্ক্রিপ্ট-মাফিক ও জোরপূর্বক আদায় করা স্বীকারোক্তিগুলো অপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে এমনভাবে বিকৃত করেছিল যে তা সত্য উদঘাটনের পরিবর্তে কেবল দোষী সাব্যস্ত করে সাজা নিশ্চিত করার একটি আমলাতান্ত্রিক হাতিয়ারে পরিণত হয়েছিল।’

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘ফলে বিচার প্রক্রিয়ায় একটি মৌলিক ভারসাম্যহীনতা দেখা দেয়: এমনকি যখন চারপাশের পরিস্থিতি— যেমন বেআইনি আটক, নির্যাতন ও আইনজীবীর অনুপস্থিতি— প্রক্রিয়াগত লঙ্ঘনের ইঙ্গিত দেয়, তবুও সেই স্বীকারোক্তিগুলোই চূড়ান্ত প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।’

কমিশন জানায়, পূর্ববর্তী মামলাগুলোয় জামিন মঞ্জুর হলেও যেসব মামলায় হেফাজতে স্বীকারোক্তি ছিল, সেগুলোতে বিচারিক স্বস্তি লাভ অত্যন্ত দুরূহ হয়ে পড়েছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজনৈতিক বিরোধী, সাহসী সাংবাদিক, শ্রমিক নেতা, বিরোধী দলের আইনজীবী এবং ন্যায়বিচারের জন্য লড়াইরত লেখক ও সাধারণ মানুষদের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি, হয়রানি, চাপ প্রয়োগ, সাজানো মামলা, খেয়ালখুশি মতো গ্রেপ্তার, গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। এসব সাজানো মামলার বেশিরভাগই হতো নির্বাচনী সময়ের সাথে মিলিয়ে, যার ফলে ভিন্নমত দমন আরও তীব্র হতো।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ফৌজদারি বিচারব্যবস্থায় তদন্ত সংস্থা, প্রসিকিউটর এবং বিচারকের ভূমিকাই মূল, কিন্তু যদি তদন্ত সংস্থা সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও আইনসম্মতভাবে তদন্ত না করে, তাহলে বিচারব্যবস্থার ক্ষতি অনিবার্য হয়ে ওঠে।

‘কারণ একটি ফৌজদারি মামলার ভিত্তি হলো তার চার্জশিট, আর যদি সেই ভিত্তি পক্ষপাতদুষ্ট তদন্তের কারণে দুর্বল হয়, তবে ন্যায়বিচারের কোনো সুযোগই থাকে না।’

প্রতিবেদন অনুযায়ী, তদন্ত কর্মকর্তারা যদি নিষ্ঠা, দক্ষতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে মামলার কার্যক্রম পরিচালনা না করেন, তবে তা বিচার ব্যবস্থার ব্যর্থতায় পরিণত হয়।

কমিশনের সুপারিশ, ‘যদি কেউ দায়িত্ব পালনে অবহেলা করেন, তাহলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

Facebook Comments Box

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ঘাটাইলে ধলাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি আয়োজিত পথসভা অনুষ্ঠিত

মাহিগঞ্জ বাজার দোকান মালিক ও ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচন সম্পন্ন

শহরের বুকে নিঃশব্দ মৃত্যুফাঁদ: রংপুরে তামাক ক্রাসিং মিলে শিশু-নারীদের শ্বাসরুদ্ধ জীবন

পাইকগাছায় সড়ক দুর্ঘটনায় বৃদ্ধের মর্মান্তিক মৃত্যু

প্রেসক্লাব পাইকগাছা এর ত্রৈ-মাসিক সভা অনুষ্ঠিত

রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়িতে শিশু গৃহকর্মী ধর্ষণের অভিযোগ

স্মৃতিচিহ্ন মুছে যাচ্ছে বাজারখোলা দোল মন্দিরের

রংপুরে যুবদলের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে

নান্দাইলের সাবেক এমপি খুররম খান চৌধুরীর ৪র্থ মৃত্যু বার্ষিকী পালিত

১০

রাজধাণীতে ভবন নির্মানের সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই শ্রমিকের মৃত্যু

১১

এনসিপির উপর হামলায় রংপুরে জেলা ও মহানগর জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল

১২

পাইকগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দুই রোগীর স্বজনদের মারামারি দেখে বৃদ্ধার মৃত্যু

১৩

আশুলিয়া সেচ্ছাসেবক লীগের নেতা গ্রেফতার

১৪

ফকিরহাটে ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদে মানববন্ধন

১৫

১৬

পাইকগাছায় ১৬ জুলাই শহিদ দিবস পালিত

১৭

১৮

গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতাকর্মীদের উপর হামলা: ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুুনা সেতু মহাসড়ক অবরোধ

১৯

রংপুরে “জুলাই শহীদ দিবস উদযাপিত হয়েছে

২০