Home আন্তর্জাতিক মালয়েশিয়ার কলিং ভিসা নিয়ে বিভ্রান্তি। কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাই কমিশনের হলরুমে প্রবাসী সাংবাদিকদের...

মালয়েশিয়ার কলিং ভিসা নিয়ে বিভ্রান্তি। কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাই কমিশনের হলরুমে প্রবাসী সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা

0

মো:নুরুল ইসলাম সুজন মালয়েশিয়া:

মালয়েশিয়ায় নবনিযুক্ত বাংলাদেশ হাই কমিশনার মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী বুধবার (২৯ অক্টোম্বর) প্রবাসী সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন।

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ থেকে পুরোদমে কর্মী পাঠানোর বিষয়টি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটিতে নবনিযুক্ত বাংলাদেশ হাই কমিশনার মঞ্জুরুল করিম খান চৌধুরী।

বুধবার (২৯ অক্টোম্বর) বিকেলে কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ হাই কমিশনের হলরুমে প্রবাসী সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, “মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর বিষয়ে মন্তব্য করার পর্যাপ্ত সময় হয়নি। এ ধরনের বিষয়ে ভুল তথ্য দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে আমাদের মালয়েশিয়ান সরকারের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। তাই শ্রমবাজার সংক্রান্ত সংবাদ যাচাই-বাছাই করে সঠিকভাবে প্রচার করা

হাই কমিশনার বলেন, “মালয়েশিয়ায় প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশি প্রবাসী আছেন। সাংবাদিকেরা সহজেই প্রবাসীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারেন এবং তাদের সমস্যাগুলো তুলে ধরতে পারেন। এতে দূতাবাস ও প্রবাসীদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি হয়। সমস্যাগুলো চিহ্নিত করার পাশাপাশি সম্ভাব্য সমাধানের পথও তুলে ধরার চেষ্টা করা উচিত।”

প্রবাসী সাংবাদিকদের বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করে সাধারণ প্রবাসীদের সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ার আহ্বান করে হাই কমিশনার বলেন, “অনেক সময় সাধারণ প্রবাসীদের সঠিক তথ্যের ঘাটতি থাকে। তারা মধ্যস্বত্বভোগীদের কথাই বেশি শোনেন, ফলে বিভ্রান্ত হন।”

অনিয়মিত প্রবাসীদের বৈধতার বিষয়ে তিনি বলেন, “এই বিষয়ে ইতোমধ্যেই মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার সফরের সময় মালয়েশিয়ার সরকারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। বৈধতা দেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ মালয়েশিয়ার সরকারের অধীনে।”

সভায় ডেপুটি হাই কমিশনার মোসাম্মাত শাহানারা মনিকা এবং দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন

সিন্ডিকেট ও অনিয়মের অভিযোগে ২০২৪ সালের জুন থেকে বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ সীমিত রাখে মালয়েশিয়া। তবে চলতি অক্টোবর নাগাদ মালয়েশিয়া ঘোষণা করেছে যে তারা যোগ্যতা প্রমানের জন্য কিছু শর্ত পূরন করে বাংলাদেশি এজেন্সিগুলোকে সুযোগ দেবে।

কলিং ভিসায় মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে এজেন্সির যে সব শর্ত পূরণ করতে হবে।

১. লাইসেন্স প্রাপ্তির পর ন্যূনতম ৫ বছর সন্তোষজনক কার্যক্রম পরিচালনার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

২. বিগত ৫ বছরে বিদেশে ন্যূনপক্ষে ৩,০০০ কর্মী প্রেরণের প্রমাণক থাকতে হবে।

৩. বিগত ৫ বছরের মধ্যে অন্তত ৩টি ভিন্ন ভিন্ন গন্তব্য দেশে কর্মী প্রেরণ ও কর্মসংস্থানের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

৪. প্রশিক্ষণ, মূল্যায়ণ, নিয়োগ এবং বিদেশে কর্মসংস্থানের বিষয়ে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রিক্রুটিং এজেন্সির অনুকূলে বৈধ লাইসেন্স থাকতে হবে।

৫. কর্মী প্রেরণকারী দেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক রিক্রুটিং এজেন্সির অনুকূলে সদাচরণের সনদ (Certificate of Good Conduct) থাকতে হবে।

৬. এজেন্সির বিরুদ্ধে জবরদস্তিমূলকভাবে শ্রমে নিয়োগ, মানব পাচার, শ্রম আইন লঙ্ঘন, জোরপূর্বক অর্থ আদায় (extortion), অর্থপাচার বা অন্য কোনো আর্থিক অপরাধ এবং অনৈতিক অভিবাসন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার রেকর্ড থাকা যাবে না।

৭. সামগ্রিক সুবিধাদিসহ রিক্রুটিং এজেন্সির নিজস্ব প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন কেন্দ্র থাকতে হবে- যেখানে আবাসন, কারিগরি প্রশিক্ষণ সুবিধাসহ দিকনির্দেশনা মডিউল (Induction module) থাকতে হবে।

৮. এজেন্সির অনুকূলে পৃথক পৃথক ৫ জন আন্তর্জাতিক নিয়োগকর্তা কর্তৃক প্রদত্ত সন্তোষজনকভাবে অভিবাসন কার্যক্রম সম্পাদানের প্রশংসাপত্র থাকতে হবে।

৯. রিক্রুটিং এজেন্সির অবশ্যই কমপক্ষে ৩ বছর যাবৎ পরিচালিত ন্যূনপক্ষে ১০,০০০ বর্গফুট আয়তনবিশিষ্ট একটি স্থায়ী অফিস থাকবে, যেখানে কর্মী বাছাই ও নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার মতো অবকাঠামোগত সুবিধা থাকতে হবে।

১০. রিক্রুটিং এজেন্সির অবশ্যই ইতঃপূর্বে বিদেশে কর্মী প্রেরণের ক্ষেত্রে গন্তব্য দেশের (মালয়েশিয়াসহ) নিয়োগ প্রক্রিয়ার শর্তাবলি আইনসম্মত ও পদ্ধতিগতভাবে অনুসরণ করার প্রমাণক থাকতে হবে।

এই শর্তগুলো যেসব এজেন্সি পূরণ করতে পারবে সেসব এজেন্সির তালিকা সরকার মালয়েশিয়ার কাছে পাঠাবে। এরপর কলিং ভিসার কার্যক্রম শুরু হবে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Exit mobile version